বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের জাতীয় সাত বীরশ্রেষ্ঠের একজন বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মোঃ রুহুল আমিন। বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন নামে বহুল পরিচিত রুহুল আমিন ছিলেন বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর একজন ইঞ্জিনরুম আরটিফিসিয়ার। তাঁর নামে গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর বিগত ২০ জুলাই ২০০৮ সালে স্থাপন করা হয়। রুহুল আমিনের বাড়ির পাশে তার পরিবারের দান করা ২০ শতক জমিতে স্থানীয় সরকার বিভাগের অর্থায়নে নোয়াখালী জেলা পরিষদ বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মো. রুহুল আমিন গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করে।
বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মো. রুহুল আমিন ১৯৩৫ সালেনোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার বাঘপাচড়া গ্রামে (বর্তমানশহীদ রুহুল আমিন নগর) জন্মগ্রহন করেন। তার বাবা আজহারপাটোয়ারী ও মাতা জুলেখা খাতুন।বাঘপাচড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করেআমিষাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। তিনি ১৯৫৩ সালে জুনিয়রমেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে নৌ-বাহিনীতে যোগদান করেআরব সাগরে অবস্থিত নানোরা দ্বীপে পিএনএস বাহাদুর-এপ্রাথমিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ শেষ করে তিনিপিএনএস কারসাজে যোগদান করেন।১৯৫৮ সালে তিনি পেশাগত প্রশিক্ষণ শেষ করেন এবং ১৯৬৫সালে মেকানিশিয়ান কোর্সের জন্য নির্বাচিত হন। পরেআর্টিফিসার পদে নিযুক্ত হন। ১৯৬৮ সালে চট্টগ্রাম পিএনএস বখতিয়ার নৌ-ঘাঁটিতে বদলি হয়ে যান। ১৯৭১ এর এপ্রিলে ঘাঁটি থেকে পালিয়ে গিয়ে ভারতের ত্রিপুরাসীমান্ত অতিক্রম করে ২ নম্বর সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধেযোগদান করেন।সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২ নম্বর সেক্টরের অধীনে থেকেবিভিন্ন স্থলযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশ নৌ-বাহিনী গঠিতহলে তিনি কলকাতায় চলে যান।ভারত সরকার বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীকে পদ্মা ও পলাশ নামে দুটিগানবোট উপহার দেয়। রুহুল আমিন ছিলেন পলাশের প্রধান ইঞ্জিন রুমে আর্টিফিসার।
আধুনিক সুযোগ- সুবিধা সম্বলিত স্মৃতিজাদুঘরটিতে আছে একটি সুপরিসর এবং সু-সজ্জিত পাঠ-কক্ষ ও অভ্যর্থনা কক্ষ এবং তত্ত্ববধায়ক ও লাইব্রেরিয়ানের জন্য আলাদা কক্ষ। আর গ্রন্থাগারে আছে মুক্তিযুদ্ধের অনেক স্মৃতিবিজরিত নথিপত্র ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক দুর্লবসব বই। যেগুলু সাক্ষী হয়ে আছে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের।
কিভাবে যাওয়া যায়:
সোনাইমুড়ী উপজেলার কলেজ গেট থেকে সি.এন.জি অথবা অটো-রিক্সায় রুহুল আমিন সড়ক দিয়ে ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে নান্দিয়াপাড়া পূর্ব বাজার এসে দক্ষিনে তাকালেই ২০০গজ দুরে দেখা যায় এই স্মৃতি জাদুঘর ও বীরশ্রেষ্ঠের বাড়ি।