বিনোদনের অন্যতম স্থান রাজেশপুর ইকোপার্ক। বর্ষা মৌসুম ছাড়া বছরের বাকি সময়টাতে ঘুরে দেখার মতো এখানে রয়েছে মনোমুগ্ধকর পরিবেশ। কুমিল্লা মহানগরীর ১৬ কিলোমিটার দক্ষিণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে লালবাগ এলাকা থেকে দুই কিলোমিটার ভেতরে রাজেশপুর ইকো পার্ক। প্রাকৃতিক সবুজ শালবনে ঘেরা কুমিল্লা সদর দক্ষিণ রাজেশপুর ইকো পার্ক। পার্কে ঢুকতেই পর্যটককে অভিবাদন জানাবে মৃৎ শিল্পের বিশাল ডানা মেলা ঈগল পাখি এবং সবুজ শাল ও জারুল গাছ। শোনা যাবে পাখির কিচির-মিচির ডাক। নির্জনতার খোঁজে এবং সবুজের মাঝে প্রাণ ভরে নিঃশ্বাস নিতে দর্শনার্থীরা এখানে এক সময় ভিড় জমাতেন।
৫৮৭.৮৯ একর ভূমির উপর এ পার্ক। সাধারণভাবে এটি একটি শাল গাছের বন হলেও বর্তমানে প্রায় ৩০৬ একর শালবনের পাশাপাশি ৮৭ একর উডলট বাগান, ৭৩ একর কৃষি বন বাগান, ২৬০ একর বেত বাগান, তেলসুর, গর্জন, কাজু বাদাম, লোহা কাঠ, শোভা বর্ধনকারী গাছ, বাঁশ ঝাড়, কদম, জারুলের শোভা এখানে পর্যটকদের মোহিত করে। রাজেশপুর ইকো পার্কের উত্তর ও পূর্বে রয়েছে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য। প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে গঠিত রাজেশপুরের এ বনাঞ্চলের গহিন অরণ্যে রয়েছে ব্যাপক প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য।
রাজেশপুর ইকো পার্ক ত্রিপুরা রাজ্যের গহীন অরণ্যের সাথে যুক্ত। ফলে মাঝে মাঝে হরিণ, বাঘ সহ নানা পশু এই পার্কের ভিতরে চোখে পড়ে। এই ইকো পার্কে ৮৪ প্রজাতির উদ্ভিদ এবং ১৩৫ প্রজাতির প্রাণীর মধ্যে ৬ প্রজাতির উভচর, ৪০ প্রজাতির সরীসৃপ এবং ১২৯ প্রজাতির পাখি রয়েছে।পর্যটকদের জন্য রয়েছে পিকনিক শেড এবং বনশ্রী বিশ্রামাগার। এছাড়া বিভিন্ন বন্য প্রাণীর মডেল, স্লিপার, দোলনা, শিশু কর্ণার, বসার জন্য হেলানো চেয়ার, সাইন বোর্ড, গাইড ম্যাপ ইত্যাদি স্খাপন করা হয়েছে।শালবন আর কাজু বাদাম বাগানের মধ্যে স্খাপিত হেলানো বেঞ্চ ক্ষনিক বসলেই প্রশান্তিতে ভরে যায় দেহ মন। আগত বিনোদন পিপাসুদের জন্য শাল, গর্জন ও বৈশাখী নামের তিনটি পিকনিক শেড। বন বিশ্রামাগারের সামনে এবং বনের মাঝে মাঝে নির্মাণ করা ১১টি বিচিত্র ভাস্কর্য দর্শনীয়। প্রাণীর মডেল সহজেই ভ্রমণ পিপাসুদের আকর্ষণ করবে।
প্রতিদিন বিকেলে হাজার হাজার তোতা পাখি দল বেঁধে এখানে আসে রাত্রী যাপন করার জন্য। তবে দর্শনার্থীরা দিনের বেলায় বিশ্রাম নিতে পারলেও তাদের জন্য এখানে রাত যাপনের কোনো ব্যবস্থা নেই। থাকার জন্য কুমিল্লা শহর ছাড়াও বিশ্বরোডে রয়েছে হোটেল নূরজাহান। এছাড়া শুয়াগাজি ও মিয়াবাজারে বেশকিছু হাইওয়ে রেস্টুরেন্টে রয়েছে থাকা ও খাবারের ব্যবস্থা।
কিভাবে যাবেন:
ঢাকা থেকে প্রথমে কুমিল্লায় যেতে পারেন বাস বা ট্রেনে। কুমিল্লা শহর থেকে অথবা কুমিল্লা পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড থেকে সিএনজিতে যেতে পারেন রাজেশপুর ইকোপার্কে।