ভূঁইয়াপাড়া মসজিদ| ট্র্যাভেল নিউজ বাংলাদেশ

1228

রাজধানী ঢাকা মসজিদের শহর—এটা সবারই জানা। তবে এই মহানগরের পূর্ব পাশেই গড়ে উঠেছে মসজিদের গ্রাম বেরাইদ। বেরাইদ ভূঁইয়াপাড়া মসজিদ ঢাকা জেলার বাড্ডা থানাধীন বেরাইদ ইউনিয়নে অবস্থিত বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন একটি মসজিদ ও প্রত্নতাত্ত্বিক সুলতানি, মোগল, ব্রিটিশ, পাকিস্তানি আমল থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক সময়ের আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর ১০টি মসজিদ রয়েছে বলে একে মসজিদের গ্রাম বলে ডাকা হয়।

পুরাতত্ত্ববিদদের মতে, ভূঁইয়াপাড়া এক গম্বুজবিশিষ্ট এই মসজিদটির স্থাপত্যকলার সঙ্গে ১৫০৫ সালে সোনারগাঁয় প্রতিষ্ঠিত বাবা সালেহ মসজিদের হুবহু মিল রয়েছে। তা থেকে ধারণা করা যায়, এই মসজিদের নির্মাণকালও ওই সময়ের। এ জন্য বাংলাদেশ প্রত্বতত্ত্ব অধিদপ্তরের ঢাকা আঞ্চলিক অফিস থেকে একাধিকবার ভূঁইয়াপাড়া মসজিদটি পরিদর্শন করে একে প্রাক-মোগল আমলের মসজিদ বলে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে মসজিদটিকে প্রাচীন পুরাকীর্তি হিসেবে গেজেটভুক্ত করে সেখানে সাইনবোর্ডও টাঙানো হয়েছে।

০০২ সালের দিকে ভূইয়াপাড়া মসজদিকে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে তালিকাভুক্ত করে। প্রত্নতত্ত্ববিদগণ এই মসজিদের স্থাপথ্যরীতির সাথে নারায়নগঞ্জের বন্দর শাহি মসজিদের অনেক মিল পাওয়া যায় বলে তারা এটিকে প্রাক মুঘল যুগের মসজিদ বলে মনে করেন। তবে জনশ্রুতি অনুসারে, এটি সুলতানী আমলে নির্মাণ করা হয়েছিল। বিভিন্ন মাধ্যমে এই মসজিদটির নির্মাণকাল হিসেবে ১৫০৫ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

২১ বর্গফুট আয়তনের গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদের আয়তন প্রায় চার হাজার বর্গফুট। মসজিদটি বিভিন্ন সময়ে সংস্কার ও উত্তর-পূর্ব-দক্ষিণ দিকে সম্প্রসারণ করা হয়েছে। তবে এর পশ্চিম দেয়াল এখনো অক্ষত রয়েছে। গম্বুজটি আগের আদলেই রয়ে গেছে। তাই মসজিদটি পুরাতত্ত্ব নিদর্শন হিসেবে প্রত্বতাত্ত্বিক স্বীকৃতি পেয়েছে। এর পরই রয়েছে বেরাইদ মোড়লপাড়া জামে মসজিদ। এটি প্রায় ১৭২ বছর আগে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত হয়। সম্প্রতি সম্প্রসারণের নামে মসজিদের আদি রূপ পুরোপুরি বদলে ফেলা হয়েছে। সাড়ে ছয় হাজার বর্গফুট আয়তনের ব্রিটিশ আমলের মসজিদটি দেখলে মনে হবে সেটা হাল আমলের একটি আধুনিক মসজিদ।

কীভাবে যাবেন:

ঢাকা মহানগরের পূর্ব পাশে বালু নদের তীর ঘেঁষে গড়ে উঠেছে বেরাইদ নামের এই গ্রাম। উত্তর বাড্ডা কিংবা নতুন বাজার থেকে গ্রামটির দূরত্ব পাঁচ কিলোমিটার। বর্তমানে যোগাযোগব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় গাড়িতে অথবা সিএনজিচালিত স্কুটারে যেতে সময় লাগে মাত্র ১৫-২০ মিনিট। ডুমনী ইউনিয়নের ইছাপুর বাজারঘাট থেকে নৌকায় করেও যাওয়া যায় সেখানে।