বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে এক সমৃদ্ধ জনপদের নাম মাগুরা। ১৭৮৬ সালে বৃটিশ আমলে বাংলা প্রদেশের প্রথম গঠিত জেলা যশোর। কিন্তু একজন জেলা কর্মকর্তার পরে এ বৃহৎ জেলার আইন শৃংখলা নিয়ন্ত্রণ ও প্রশাসনিক কাজ করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। মুলত মগ জলদস্যুদের হাত থেকে এ জেলার উত্তরাঞ্চলের জন সাধারণকে রক্ষা করার জন্যই ১৮৪৫ সালে যশোর জেলার প্রথম মহকুমা করা হয় মাগুরাকে।
নামকরনের ইতিহাস:-
মাগুরার নামকরণ করা হয় মুঘল যুগে। এর নামকরণ কিভাবে হয়েছে তা স্থিরভাবে বলা দুস্কর। কিংবদন্তী থেকে জানা যায় এক কালে সুন্দরবনের কাছাকাছি এই অঞ্চলে মগ জল দস্যুদের দারুণ উৎপাত ছিল। কুমার নদী ও নবগঙ্গার তীরে অবস্থিত বর্তমান মাগুরা শহরে ছিল তাদের আখড়া। নদী পথে তারা বর্গীদের মতো দস্যুপনা করতো। তাদের নামেই মগরা থেকে মাগুরা হয়েছে। নেত্রকোণাতে ও দেখা যায় সেখানে মগরা নাকে একটি নদী ও রয়েছে। বাংলাদেশে মাগুরা নামে আরো বেশ কয়েকটি গ্রাম রয়েছে, তবে জেলার মর্যাদায় উন্নীত হওয়ায় মাগুরা এখন শ্রেষ্ঠত্বের দাবীদার। তবে কোন কোন ঐতিহাসিকের মতে মুঘল নবাব মুর্শিদকুলী খার আমলে মগদের অগ্রযাত্রাকে যেখানে প্রতিহত করে ঘুরিয়ে দেওয়া হত সেই স্থানটির নাম রাখা হত মগ-ঘুরা। মগ-ঘুরাই পরবর্তীতে মাগুরা হয়েছে। মাগুরা তথা যশোর- ফরিদপুর এলাকায় মগ- দস্যুদের অত্যাচার ও লুষ্ঠনের কাহিনী আজও ইতিহাসের এক বেদনাময় অধ্যায়। ‘ছেলে ঘুমালো পাড়া জুড়ালো বর্গী এলো দেশে’ প্রচলিত এই ছড়াটিও সে সময়ের প্রকৃত চিত্রই তুলে ধরেছে। মুহম্মদপুরের রাজা সীতারাম রায় ও যশোরের রাজা প্রতাপাদিত্য মগ-বর্গী দমনে কার্যকর ভূমিকা রাখেন। বলা চলে দস্যুদের এই দুই রাজাই প্রতিহত ও পরাজিত করেন। বহু মগ বর্গী সীতারামের কাছে আত্মসমর্পন করে এবং সেনাবাহিনী ও রাজ কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ পান। আজকের মাগুরা শহরে তাদের নিবাসের ব্যবস্থাও করা হয়।
ভৌগোলিক সীমানা:-
১০৪৮ বর্গ কিমি ক্ষেত্রফল বিশিষ্ট মাগুরা জেলা উত্তরে রাজবাড়ী জেলা, দক্ষিণে যশোর ও নড়াইল জেলা, পূর্বে ফরিদপুর জেলা এবং পশ্চিমে ঝিনাইদহ জেলা দ্বারা বেষ্টিত।
মাগুরা জেলায় ৪টি উপজেলা
মাগুরা সদর উপজেলা
শ্রীপুর উপজেলা
মহম্মদপুর উপজেলা
শালিখা উপজেলা
বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব:-
এ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন,এমএনএ,ক্যাবিনেট মন্ত্রী।
সৈয়দ আতর আলি এমপিএ
আব্দুর রশিদ বিশ্বাস এমপি
এ্যডভোকেট মোহাম্মদ আছাদুজ্জামান এমপি
প্রফেসর ডাক্তার মোহাম্মদ সিরাজুল আকবর এমপি
আশিক আলী শেখ. BNCC
শ্রী বিরেন শিকদার এমপি, সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী
এডভোকেট সাইফুজ্জামান শিখর এমপি
মেজর জেনারেল (অবঃ) এম মজিদুল-উল-হক এমপি
নিতাই রায় চৌধুরী এমপি
মেজর জেনারেল (অবঃ) এটি এম আব্দুল ওহাব এমপি
কাজী সালিমুল হক কামাল এমপি
মোঃ গোলাম ইয়াকুব বীর প্রতীক
বিখ্যাত খাবার:-
রসমালাই
বিখ্যাত স্থান:-
রাজা সীতারাম এর রাজপ্রাসাদ
সুলতানী আমলে প্রতিষ্ঠিত মাগুরা আঠারখাদা মঠবাড়ি
সিদ্ধেশ্বরী মঠ
ভাতের ভিটা পুরাকীর্তি
শ্রীপুর জমিদারবাড়ি
হজরত পীর মোকাররম আলী শাহ (র:) এর দরগাহ
শত্রুজিৎপুর মদনমোহন মন্দির
নেংটা বাবার আশ্রম
যেভাবে যাবেনঃ-
ঢাকা থেকে সরাসরি বাস কিংবা ট্রেইনে চেপে সরাসরি মাগুরা জেলা শহরে পৌঁছানো যায়। ঢাকার গাবতলি,সায়দাবাদ,মহাখালি বাস টার্মিনাল গুলো থেকে বাস পাওয়া যায়।কমলাপুর স্টেশন থেকে ট্রেইন যাত্রা শুরু হয়। তবে রেল সংযোগ খুলনা পর্যন্ত। খুলানা থেকে বাসে করে যেতে হয়।