তাজিংডং পাহাড়

1729

গোটা বান্দরবানকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বলা চলে। এখানকার মূল আকর্ষণই হলো যান্ত্রিক শহরের বাইরে প্রত্যন্ত অঞ্চল আর মেঘাচ্ছন্ন পাহাড়। এখানে ভ্রমণপিপাসুরা শুধু ভ্রমণেই আসেন না, আসেন দুঃসাহসিকতা দেখাতে। সবুজের সমারোহ আর মেঠো পথ ধরে বেয়ে ওঠা পাহাড় আর পাহাড়।

বাংলাদেশের সর্বচ্চ পাহাড়ের নাম তাজিংডং। স্থানীয় ভাষায় তাজিং অর্থ বিশাল এবং ডং অর্থ পাহাড় একত্রে যার অর্থ দাড়ায় বিশাল পাহাড়। এ দুটি শব্দ থেকে তাজিংডং পর্বতের নামকরণ করা হয়। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৪,৩০০ ফুট উঁচুতে অবস্থিত পূর্বে কেওক্রাডংকে দেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মনে করা হত, আধুনিক গবেষণায় এই তথ্য ভুল প্রমাণিত হয়েছে। এই পাহাড়ে হাজার হাজার পর্যটক বেড়াতে এসে থাকেন।

র্ষাকালে এখানকার সৌন্দর্য পুরোপুরি উপভোগ করা যায় না। তবে, শীতকালে অনেক পর্যটক এখানকার সৌন্দর্য উপভোগ করতে পায়ে হেঁটে এসে থাকেন। তবে, বর্তমানে চান্দের গাড়িতে করে আপনি তাজিংডং এর কাছাকাছি পৌছাতে পারবেন। তবে, বাকি পথ আপনাকে পায়ে হেঁটে অতিক্রম করতে হবে। শীতকালে এখানে আসলে আপনাকে গরম কাপড় পরিধান করতে হবে। তাজিংডং এ পৌঁছানোর পথে হাঁটার অনন্য অভিজ্ঞতা আপনার মনে থাকবে বহুদিন। এখানে তাজিংডং ছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন আদিবাসী সম্প্রদায় যাদের সংস্কৃতি এবং জীবন বৈচিত্র্য প্রকৃতির সাথে সম্পৃক্ত। একসময় তাজিংডং এ পৌঁছানো দুরুহ হলেও বর্তমানে প্রচুর পর্যটক প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগের জন্য এখানে এসে থাকেন। শুধু তাজিংডং এ নয় প্রকৃতির সৌন্দর্য ছড়িয়ে আছে এর আশেপাশেও।

যেভাবে যাবেনঃ-

বান্দরবান থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরত্বে রুমা অবস্থিত। উন্নত যোগাযোগ এবং পরিবহন ব্যবস্থা না থাকায় এটি বাংলাদেশের অন্যতম দুর্গম উপজেলা। তাজিংডং এ যেতে হলে আপনাকে প্রথম রুমায় পৌছাতে হবে। রুমায় যাওয়ার পথে নিরাপত্তা বাহিনীর বিভিন্ন ক্যাম্পে আপনাকে নাম ও ঠিকানা লিপিবদ্ধ করতে হবে। আপনার মনে রাখতে হবে যে বিকাল ৪টার পর কাউকে বগালেক, কেওক্রাডং এবং তাজিংডং এর উদ্দেশ্যে যাত্রা করতে দেয়া হয়না। বর্ষাকালে কৈখংঝিরি পর্যন্ত আপনি জিপে করে যেতে পারবেন। সেখান থেকে নৌকায় করে এক ঘণ্টায় রুমায় যেতে পারবেন। শীতকালে জিপে করে আপনি রুমা ব্রিজঘাট পর্যন্ত যেতে পারবেন এবং সেখান থেকে ১৫ মিনিট থেকে ২০ মিনিটে নৌকায় করে রুমায় পৌছাতে পারবেন। রুমা সদর থেকে বগা লেকে যেতে আপনি পিকআপ অথবা জিপ ভাড়া করতে পারবেন। বগালেক থেকে তাজিংডং এ পৌছাতে আপনাকে পাহাড়ের মধ্যে দিয়ে পায়ে হাঁটতে হবে।