রংপুর জেলা | ট্র্যাভেল নিউজ বাংলাদেশ

1133

রংপুর জেলা বাংলাদেশের একটি প্রশাসনিক এলাকা, যা রংপুর বিভাগের অন্তর্গত। রংপুর জেলা ১৭৭২ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়। রংপুর জেলার নামকরনের পেছনে রয়েছে একটা চমৎকার ইতিহাস। শোনা যায় ‘রঙ্গপুর’ থেকেই কালক্রমে নামটি হয়েছে রংপুর। ইতিহাস থেকে আমরা জানতে পারি যে এই উপমহাদেশে ইংরেজরা প্রচুর নীল চাষ করত। আর স্থানীয় লোকজন নীল কে রঙ্গ বলেই জানত। আর সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথেই সেই রঙ্গ থেকেই ‘রঙ্গপুর’ যা আজকে আমাদের কাছে রংপুর নামে পরিচিতি। রংপুর জেলার অপর নাম ছিল জঙ্গপুর।

নামকরনের ইতিহাস:-

রংপুর নামকরণের ক্ষেত্রে লোকমুখে প্রচলিত আছে যে পূর্বের ‘রঙ্গপুর’ থেকেই কালক্রমে এই নামটি এসেছে।ইতিহাস থেকে জানা যায় যে উপমহাদেশে ইংরেজরা নীলের চাষ শুরু করে। এই অঞ্চলে মাটি উর্বর হবারকারণে এখানে প্রচুর নীলের চাষ হত। সেই নীলকে স্থানীয় লোকজন রঙ্গ নামেই জানত। কালের বিবর্তনে সেই রঙ্গ থেকে রঙ্গপুর এবং তা থেকেই আজকের রংপুর। অপর একটি প্রচলিত ধারনা থেকে জানা যায় যে রংপুর জেলার পূর্বনাম রঙ্গপুর। প্রাগ জ্যোতিস্বর নরের পুত্র ভগদত্তের রঙ্গমহল এর নামকরন থেকে এই রঙ্গপুর নামটি আসে। রংপুর জেলার অপর নাম জঙ্গপুর। ম্যালেরিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব থাকায় কেউ কেউএই জেলাকে যমপুর বলেও ডাকত। তবে রংপুর জেলা সুদুর অতীত থেকে আন্দোলন প্রতিরোধের মূল ঘাঁটি ছিল। তাই জঙ্গপুর নামকেই রংপুরের আদি নাম হিসেবে ধরা হয়। জঙ্গ অর্থ যুদ্ধ, পুর অর্থ নগর বা শহর। গ্রাম থেকে আগত মানুষ প্রায়ই ইংরেজদের অত্যাচারে নিহত হত বা ম্যালেরিয়ায় মারা যেত। তাই সাধারণ মানুষ শহরে আসতে ভয় পেত। সুদুর অতীতে রংপুর জেলা যে রণভূমি ছিল তা সন্দেহাতীত ভাবেই বলাযায়। ত্রিশের দশকের শেষ ভাগে এ জেলায় কৃষক আন্দোলন যে ভাবে বিকাশ লাভ করে ছিল তার কারণে রংপুরকে লাল রংপুর হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছিল।

ভৌগোলিক সীমানা:-

রংপুর জেলা ২৫৹০৩˝থেকে ২৯৹৩২˝ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত । মোট আয়তন ২৩০৮ বর্গ কিমি । আটটি উপজেলা, ইউনিয়ন ৩৮টি, ১৪৫৫টি মৌজা এবং ১ টি সিটি কর্পোরেশন৩টি পৌরসভা নিয়ে রংপুর জেলা গঠিত।রংপুর জেলার উত্তরে লালমনিরহাট ও তিস্তা নদী, দক্ষিণে গাইবান্ধা ও দিনাজপুর জেলা, পূর্বে গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলা এবং পশ্চিমে দিনাজপুর ও নীলফামারী জেলা অবস্থিত।তিস্তা নদী উত্তর ও উত্তর পূর্ব সীমান্তকে লালমনিরহাট এবং কুড়িগ্রাম জেলা থেকে আলাদা করেছে।

রংপুর জেলায় ৮টি উপজেলা

কাউনিয়া,

গংগাচড়া,

তারাগঞ্জ,

পীরগঞ্জ,

পীরগাছা,

বদরগঞ্জ,

মিঠাপুকুর এবং

রংপুর সদর।

বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব:-

দেবী চৌধুরানী

হেয়াত মামুদ, মধ্যযুগের কবি

বেগম রোকেয়া, বাংলার মুসলিম নারী জাগরণের অগ্রদূত

আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম, বাংলাদেশের প্রথম প্রধান বিচারপতি ও ষষ্ঠ রাষ্ট্রপতি

লেফটেন্যান্ট জেনারেল আলহাজ্ব পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ, বাংলাদেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ও ষষ্ঠ সেনাপ্রধান, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী

এম এ ওয়াজেদ মিয়া, খ্যাতনামা পরমাণু বিজ্ঞানী

মোহাম্মদ খেরাজ আলী, খাতুনিয়া সার্কুলেটিং লাইব্রেরি, রংপুরের প্রতিষ্ঠাতা

ড. রেজাউল হক, সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ

মোতাহার হোসেন সুফী, সাহিত্যিক

মুহম্মদ আলীম উদ্দীন, সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ

প্রফেসর এমদাদুল হক মো. মতলুব আলী , সাবেক ডিন, চারুকলা অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। শিল্প সমালোচক, চিত্রশিল্প ও গীতিকার

আনিসুল হক, লেখক, নাট্যকার ও সাংবাদিক

নাসির হোসেন,বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটার

সানজিদা ইসলাম,বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের সদস্য

মাহবুব আলম, সাহিত্যিক

রফিকুল হক, ছড়াকার, সাংবাদিক

চৌধুরী খালেকুজ্জামান , মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, আয়কর আইনজীবি, সদস্য, উপদেষ্টা পরিষদ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ।

বিখ্যাত খাবার:-

তামাক

ইক্ষু

বিখ্যাত স্থান:-

পায়রাবন্দ

তাজহাট জমিদারবাড়ি

কেরামতিয়া মসজিদ ও মাজার

ভিন্ন জগৎ

ঝাড়বিশলা

রংপুর চিড়িয়াখানা

হাতী বান্ধা মাজার শরীফ

চিকলির বিল

মিঠাপুকুর তিন কাতারের মসজিদ

ইটাকুমারী জমিদারবাড়ি

দেওয়ানবাড়ির জমিদারবাড়ি

বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্র

কিভাবে যাবেন:-

সড়ক পথে ঢাকা হতে রংপুরের দূরত্ব ৩০৪ কিলোমিটার এবং রেলপথে ঢাকা হতে রংপুর রেল স্টেশনের দূরত্ব ৫২৯ কিলোমিটার। ঢাকার গাবতলী, মহাখালী, সায়েদাবাদ, শ্যামলী, কল্যানপুর, কলাবাগান, ফকিরাপুল – প্রভৃতি বাস স্টেশন থেকে রংপুর আসার সরাসরি দুরপাল্লার এসি ও নন-এসি বাস সার্ভিস আছে; এগুলোতে সময় লাগে ৫.৩০ হতে ৮ ঘন্টা।

ঢাকার কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে রংপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা ট্রেনে সরাসরি এখানে আসা যায়। কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে প্রতিদিন একাধিক ট্রেন রংপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।

রংপুরে সরাসরি বিমানে আসা যায়; ঢাকা থেকে রংপুরের সাথে সরাসরি বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে সৈয়দপুর বিমানবন্দর থেকে। বাংলাদেশ বিমান, জেট এয়ার, নোভো এয়ার, রিজেন্ট এয়ার, ইউনাইটেড এয়ার – প্রভৃতি বিমান সংস্থার বিমান পরিষেবা রয়েছে ঢাকা থেকে রংপুর আসার জন্য।