উপমহাদেশের একমাত্র নারী নবাব নবাব ফয়জুন্নেছা। যিনি শিা বিস্তারে কাজ করে অন্ধকারকে তাড়িয়েছেন। শিাবিদদের ভাষায় তিনি ছিলেন ‘এক আলোর ফেরিওয়ালা’। কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার পশ্চিমগাঁওয়ে ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে এ মহীয়সী নারীর স্মৃতিচিহ্ন জমিদার বাড়ি অবস্থিত।১৮ শতকের মাঝামাঝি সময়ে বাড়িটি নির্মিত হয়েছে। ফয়জুন্নেছার বিয়ের এক লাখ এক টাকা দেন মোহরের টাকা দিয়ে বাড়িটি নির্মিত হয়।নবাব ফয়জুন্নেছার বাড়িটি দেখতে প্রতিদিনই দর্শনার্থীরা ভিড় করছেন।বাড়িটির সংরক্ষণের পক্ষে স্থানীয় জনগণের মতামতের ভিত্তিতে এটি বর্তমানে সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষিত হয়েছে।
নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী এ উপমহাদেশে নারী জগতের উজ্জ্বল নত্র। কুমিল্লার লাকসামের পশ্চিমগাঁও এলাকায় ১৮৩৪ সালে নওয়াব ফয়জুন্নেছা জন্মগ্রহণ করেন। নারী মুক্তি আন্দোলনের অগ্রপথিক নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী নারীদের জন্য উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন। নওয়াব ফয়জুন্নেছা ছিলেন জমিদার আহমদ আলী চৌধুরী ও আরফান্নেছা চৌধুরানীর প্রথম মেয়ে। ফয়জুন্নেছা চৌধুরানীর কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিা না থাকলেও তিনি বাংলা, আরবি, ফার্সি ও সংস্কৃত ভাষায় বেশ পারদর্শী ছিলেন।
দেশে বিদেশে শিক্ষার প্রচারে তার অবদান অনস্বীকার্য। নওয়াব ফয়জুন্নেসা (পশ্চিমগাঁয়ে) একটি অবৈতনিক মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। মাদ্রাসার ছাত্রদের অন্য একটি ছাত্রাবাসও ছিল।মাদ্রাসার ভালো ফলাফলে উৎসাহিত হয়ে পরবর্তিকালে তাঁর (ফয়জুন্নেসার) বংশধরগণ ১৯৪৩ খ্রীঃ এটিকে উচ্চ মাধ্যমিক ইসলামিক কলেজে রূপান্তরিত করেন। ১৯৬৫ খ্রীঃ কলেজটি একটি ডিগ্রী কলেজে রূপান্তরিত হয়ে নওয়াব ফয়জুন্নেসা ডিগ্রী কলেজ নামে আখ্যায়িত হয়। ১৯৮২ খ্রীঃ এ কলেজটির সরকারিকরণ হয় এবং নাম হয় নওয়াব ফয়জুন্নেছা সরকারি কলেজ । তাছাড়া তিনি আর তার কন্যা বদরুন্নেসা পশ্চিমগাঁওয়ে নওয়াব ফয়জুন্নেছা সরকারি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। মেয়েদেরকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার জন্য তিনি সব সময় উৎসাহিত করতেন। তিনি মেয়েদের জন্য হোস্টেলের ব্যবস্থা করেছিলেন। তার জমিদারির আয় থেকে মেয়েদের জন্য নির্মিত এ হোস্টেলের সব খরচ বহন করা হতো। মেয়েদের জন্য মাসিক বৃত্তির ব্যবস্থাও তিনি করেছিলেন । তিনি পবিত্র মক্কা শরিফে ‘মাদ্রাসা-ই-সওলাতিয়া ও ফোরকানিয়া সহ বিভিন্ন শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠানে প্রচুর পরিমানে সহায়তা করেন।
যেভাবে যাবেনঃ
ঢাকার গুলিস্তান,মতিঝিল কিংবা কলাবাগান থেকে কুমিল্লা গামী বাসে করে কুমিল্লা পৌছাতে হবে। সেখান থেকে রিক্সা যোগে একমাত্র নারী নবাব ফয়জুন্নেছা বাড়ি যাওয়া যায়।