জগন্নাথ মন্দির| ট্র্যাভেল নিউজ বাংলাদেশ

1268

কুমিল্লা জগন্নাথ মন্দির বাংলাদেশের কুমিল্লায় অবস্থিত জগন্নাথের প্রতি উৎসর্গিত একটি হিন্দু মন্দির। খ্রিস্টীয় ষোড়শ শতাব্দীতে নির্মিত এই মন্দিরটি বাংলার টেরাকোটা স্থাপত্যের নিদর্শন বহন করছে। এই মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার মূর্তি প্রকৃতপক্ষে ত্রিপুরার একটি মন্দিরে স্থাপিত ছিল। পরবর্তীকালে মূর্তিগুলি এই মন্দিরে নিয়ে আসা হয়। জগন্নাথ মন্দির “সপ্তরত্ন মন্দির” নামেও পরিচিত।  প্রায় ৪০০ বছরের পুরোনো এই মন্দিরটি খ্রিস্টীয় ষোড়শ শতাব্দীতে নির্মিত করেন ত্রিপুরারাজ শ্রী শ্রীযুক্ত মহারাজা রাধা কিশোর মানিক্য বাহাদুর।

এটি ছিল একটি সু-উচ্চ মন্দির। এতে সতেরটি চূড়া বা রত্ন ছিল।এ জন্য এটিকে সপ্ত রত্ন মন্দির বলা হয়। অষ্ট কোণাকার একটি কেন্দ্রীয় কক্ষকে কেন্দ্র করে এই মন্দির নির্মিত হয়ে ছিল। এই কেন্দ্রীয় কক্ষের উপরেই ছিল এর সু-উচ্চ চূড়া বা রত্ন। সেটি এখনও টিকে আছে। এই কেন্দ্রীয় কক্ষের চারদিকে ছিল আরও অনেক কক্ষ। মন্দিরটি ছিল তিনতলা বিশিষ্ট। কেন্দ্রীয় কক্ষকে ঘিরে নির্মিত ছিল অষ্ট কোণাকার নির্মিত প্রথম তলা। এর উপরে ছিল ৮টি চূড়া বা রত্ন। দ্বিতীয়তলা অষ্টা কোণাকার নির্মিত হয়েছিল এর উপরেও ছিল ৮টি চূড়া বা রত্ন। প্রথম ও দ্বিতীয় তলার চূড়া গুলি এখন বিনষ্ট প্রায়। চারতলা বিশিষ্ট উপরে ত্রিকোনাকার এই মন্দিরের একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য হল, এটি বাংলাদেশের একমাত্র মন্দির যা, অষ্টভুজ আকৃতির ভিত্তির উপর তৈরী। মন্দিরের নিচ তলা ও প্রথম তলার টেরাকোটার অনন্য কারুকাজের অনেকটাই আজ বিনষ্টপ্রায়। কিছু লতা পাতাফুলের টেরাকোটা দ্বিতীয় তলা ও উপরের ত্রিকোনাকার টাওয়ারের গায়ে দেখা যায়।

বর্তমানে জগন্নাথ মন্দির, পুকুর, রথটানার রাস্তা, মন্দিরের প্রধান ফটক ও কিছু ফসলী জমি ও মামলাধীনসহ প্রায় ১৫একর সম্পত্তি মন্দিরের দখলে আছে। সরকার যদি আন্তরিক হয়ে জগন্নাথ দেবের জবর দখলকৃত বাকী সম্পত্তি উদ্ধার করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণসহ রথটানার রাস্তাটি পাকা করে দেন তাহলে ভক্তদের থাকা খাওয়ার সু-ব্যবস্থা করা যাবে। সরকার ও ধর্ণাঢ্য ব্যক্তিদের কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য সহযোগিতা কামনা করেন কমিটি’র নেতৃবৃন্দ।

কিভাবে যাবেনঃ-

কুমিল্লা শহর থেকে ৫ কিঃমিঃ দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বিবির বাজার স্থল বন্দর সড়কে জগন্নাথপুর গ্রামে মন্দিরটির অবস্থান। শহরের চকবাজার থেকে জগন্নাথ মন্দিরে নিয়মিতভাবে সিএনজি চালিত অটোরিক্সা যাতায়াত করে থাকে। এতে সময় লাগে প্রায় ২০ মিনিট। ভাড়া মাথাপ্রতি ১০ টাকা।