রাজধানী ঢাকার এয়ারপোর্ট রোডে অবস্থিত বাংলাদেশের প্রধান এবং সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর। বিমানবন্দরটি ১৯৮১ একর জায়গা নিয়ে বিস্তৃত। বাংলাদেশে প্রথম এবং একমাত্র আন্তর্জাতিক তেজগাঁও বিমান বন্দর প্রতিষ্ঠা করা হয়। পরবর্তীতে এর সকল কার্যক্রম কুর্মিটোলায় স্থানান্তর করা হয়। প্রতিবছর এই বিমানবন্দর থেকে আভ্যন্তরীন এবং আন্তর্জাতিক রুটে ৫২ শতাংশ ফ্লাইট ওঠানামা করে। এই বিমানবন্দর দিয়ে প্রতিবছর ৪০ লক্ষ আন্তর্জাতিক এবং ১০ লক্ষ আভ্যন্তরীন যাত্রী যাতায়াত করে থাকে এবং বার্ষিক প্রায় ১,৫০,০০০ টন মালামাল পরিবহন করা হয়। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর বাংলাদেশকে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোর সাথে সংযুক্ত করেছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিমান অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। বাংলাদেশ বিমান এই বিমানবন্দর ব্যবহার করে ইউরোপ এবং এশিয়ার ৩১টির বেশী শহরে তার ফ্লাইটগুলো পরিচালনা করে আসছে।
অবকাঠামোঃ-
বিমানবন্দরটিতে দুইটি প্রধান টার্মিনাল রয়েছে। টার্মিনাল দুটি হচ্ছে; (০১) Terminal 1 (T1) এবং (০২) Terminal 2 (T2)। আন্তর্জাতিক রুটের ফ্লাইটসমূহ পরিচালনায় T1 এবং T2 ব্যবহার করা হয়। T1 এবং T2 এর সংযোগ স্থানটিকে আভ্যন্তরীন রুটের ফ্লাইটসমূহ পরিচালনায় ব্যবহার করা হয়। এ্যারাইভেল ডেকটি বিমানবন্দরের নিচতলায় (Ground Floor) এ অবস্থিত। ডিপারচার হলটি বিমানবন্দরের প্রথম তলায় অবস্থিত (Upper Floor) এ অবস্থিত। এই বিমানবন্দরে একটি ভিআইপি টার্মিনাল (VIP Terminal) রয়েছে। ভিআইপি টার্মিনালটি ২০০ মিটার জুড়ে বিস্তৃত।এই টার্মিনালটি কদাচিত ব্যবহার করা হয়। বিমানবন্দর টার্মিনালে রয়েছে ডিউটি ফ্রি শপ, মেডিক্যাল সার্ভিসেস, ব্যাংকিং এবং এটিএম সেবা, শারিরীক অসুস্থতার জন্য গাড়ী ভাড়া করার কাউন্টার, কোন কিছু হারানো গেলে সেজন্য যোগাযোগ কাউন্টার, মালপত্র বহনের সুবিধাসহ রয়েছে ভিআইপি লঞ্জি সার্ভিস।তাছাড়া বিমানবন্দরটিতে রয়েছে রানওয়ে, দুটি টার্মিনাল বিল্ডিং, হ্যাঙ্গারস, উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন রাডার, গুদামঘর এবং এয়ারক্রাফট ব্যবস্থাপনা এবং পরিচালনার অত্যাধুনিক সকল যন্ত্রপাতি।
আন্তর্জাতিক রুটের অনেক এয়ারলাইন্সের বিমানগুলো শাহজালাল বিমানবন্দর ব্যবহার করে যাত্রী এবং মালপত্র বহন করে থাকে। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো;
Aeroflot, British Airways, Emirates, Gulf Air, Indian Airlines, Kuwait Airways, Malaysia Airlines, Pakistan International Airlines, Royal Nepal Airlines, Saudi Airways, Singapore Airlines, Thai Airways অন্যতম। রিজিওনাল রুটের ফ্লাইটগুলো পরিচালিত হয় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স; জিএমজি এয়ারলাইন্স; ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ, এ্যারো বেঙ্গল এয়ারলাইন্স, এয়ার পারাবত এবং রিজেন্ট এয়ারওয়েজের মাধ্যমে। নিয়মিত ফ্লাইটগুলো ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন বিভাগে যাতায়াত করে থাকে। রিজিওনাল ফ্লাইটগুলো সাশ্রয়ী হয় এবং সপ্তাহে ২/৩ দিন যাতায়াত করে।
পরিবহন এবং গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থাঃ-
গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য রয়েছে সুপ্রশস্ত তলাবিশিষ্ট নিজস্ব বহুতল ভবন। এখানে গাড়ি, বাস এবং কোচ সার্ভিসের গাড়িগুলো অনায়াসেই পার্ক করা যায়। এখান সবসময়ই সিএনজি, ক্যাব এবং অটোরিক্সা পাওয়া যায়। এছাড়া এয়ারপোর্টের যাত্রী পরিবহনের জন্য নিজস্ব সাটল বাস রয়েছে। এছাড়া ঢাকার আন্তর্জাতিকমানের হোটেলগুলোর নিজস্ব ট্যুরিস্ট পিক আপ বাসগুলো অপেক্ষমান অবস্থায় থাকে।
শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে যেসব আন্তর্জাতিক রুটের ফ্লাইট চালু রয়েছেঃ-
ইউএস -বাংলা এয়ারলাইন্স
ইন্ডিগো এয়ার
এতিহাদ এয়ারওয়েজ
এমিরেটস এয়ারলাইনস
এয়ার ইন্ডিয়া
এয়ার এরাবিয়া
এয়ার এশিয়া
এয়ার কানাডা
এয়ার ফ্রান্স
এয়ার মরিশাস
ওমান এয়ার
কাতার এয়ারওয়েজ
কুয়েত এয়ারওয়েজ
ক্যাথে প্যাসিফিক
গালফ এয়ার
গো এয়ারলাইনস
চায়না ইস্টার্ন
চায়না সাউদার্ন
জেট এয়ারওয়েজ
টাইগার এয়ার
তুর্কি এয়ারলাইনস
থাই এয়ারওয়েজ
থাই লায়ন
দ্রুক এয়ার
নভো এয়ার
পাকিস্তান এয়ারলাইনস
ফ্লাই দুবাই
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস
ব্যাংকক এয়ারওয়েজ
মালদ্বীপএয়ান এয়ারলাইন্স
মালয়েশিয়া এয়ারলাইনস
মালিন্দো-এয়ার
মিহিন লংকা এয়ার
রিজেন্ট এয়ারওয়েজ
শ্রীলংকা এয়ারলাইনস
সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস
সৌদি এয়ারলাইন্স
স্কুট এয়ার
স্পাইসজেট এয়ার
শাহজালাল বিমানবন্দর কাস্টমস এর নিয়মকানুনঃ-
১।বাংলাদেশ পরিদর্শনে আসা সকল নাগরিককে তাদের মালপত্র কাষ্টম অফিসে চেক করাতে হবে।
২।বাংলাদেশ থেকে গমনের সময় সকল নাগরিককে তাদের মালপত্র কাষ্টম অফিসে চেক করাতে হবে।
৩।কারেন্সীর একটি স্টেটমেন্ট বা ফর্ম কাষ্টম অফিসারের নিকট জমা দিতে হয় এই মর্মে যে, ভিজিটর কি পরিমানে কারেন্সী সংগে রেখেছেন।
৪।অবৈধ কোন পন্য বাংলাদেশে নিয়ে আসলে বা বাংলাদেশ থেকে গমনের সময় ধরা পড়লে কাষ্টম কর্তৃপক্ষ উপযুক্ত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকেন।