বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমী বা বার্ড

1373

বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমী বা বার্ড, বাংলাদেশের পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের অধীনস্থ একটি স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। ১৯৫৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এ প্রতিষ্ঠানটি পল্লী উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ, গবেষণা ও প্রায়োগিক গবেষণার মাধ্যমে পল্লী অঞ্চলের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন তথা পল্লীর দারিদ্র্য বিমোচনে নিরলস সহায়তা করে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটি কুমিল্লা শহর থেকে ১০ কিলোমিটার পশ্চিমে কোটবাড়ীতে অবস্থিত।

বাংলাদেশের পল্লী অঞ্চলে মানুষের আর্থ-সামাজিক সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া একাডেমীর গবেষণা কাজের একটি প্রধান লক্ষ্য। এক্ষেত্রে বার্ড কৃষি, সমবায়, দারিদ্র্য, ক্ষুদ্রঋণ, গ্রামীণ ভৌত অবকাঠামো, গ্রামীণ শিল্প, উন্নয়ন যোগাযোগ, সুশাসন, জেন্ডার, পরিবেশ উন্নয়ন, স্থানীয় সরকার, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, শিক্ষার গুণগত উন্নয়ন, স্বাস্থ্য-পুষ্টি, সমাজ পরিবর্তন ইত্যাদি বিষয়ে ৭০৪ টি গবেষণা পরিচালনা করেছে। এ ছাড়া ২০০৮-২০০৯ অর্থ বছরে বার্ডের ২৫ টি নতুন গবেষণা প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে খামার ব্যবস্থাপনা ও গ্রামীণ পরিবারের জীবিকার ধরন নিরূপণ, গ্রামীণ এলাকায় বয়স্কদের ওপর সেফটিনেট কর্মসূচির প্রভাব নির্ণয়, দারিদ্র্য নিরসন কার্যক্রমে সুশাসনের অবস্থা নিরূপণ, পল্লী উন্নয়নে তথ্য-প্রযুক্তি কৌশল, কৃষি ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সিভিডিপি’র অবদান, কৃষি পণ্যসমূহের ভেল্যু চেইন বিশ্লেষণ, কুমিল্লা মডেল রিভিজিটিং প্রভৃতি। বার্ডের গবেষণা বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়ন এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে দাতা সংস্থার অর্থায়নে সম্পন্ন হয়।

সাধারণ মানুষের কাছে বার্ড একটি পিকনিক স্পট ও বিনোদন কেন্দ্র। এখোনে রয়েছে পিকনিক ও বিনোদনের সব ব্যবস্থা ভেতরে রয়েছে পাহাড় ও নানারকম গাছগাছালি। বাইরে থেকে বোঝাই যায়না ভেতরে একটি সুন্দর বোটানিক্যাল গার্ডেন আছে। রয়েছে কয়েকটি টিলা। এখানকার নীলাচল পাহাড় আপনাকে বার বার টানবে ওখানে যাওয়ার জন্য। আছে বনমালঞ্চ নামে একটি সুন্দর ভিআপি পিকনিক স্পট। ভেতরে সারাদিন ঘুরে বেড়ানো ও খেলাধুলার জন্য রয়েছে প্রচুর পরিমাণ জায়গা। মনে হবে এ একটা আনন্দরাজ্য।

বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমী কুমিল্লা বার্ড আপনাকে অন্যরকম স্বাদের একটা ভ্রমণ সুখ দেবে। কেননা এখানে রয়েছে গাছ-গাছালী শোভিত, পাখির কুজন আর ছায়া সুনিবিড় নিরাপদ এক ভ্রমণকেন্দ্র। আপনাকে অবশ্যই অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করতে হবে। বার্ড এর একাডেমীক ভবন হোস্টল এর পেছনে রয়েছে বাগান। প্রায় সাড়ে তিনশ কর্মী নিয়ে এই প্রতিষ্ঠান। পেছনে রয়েছে কর্মীদের আবাস্থল। গাছে গাছ ফল পুল আর খেলার বাগান, বাঁশঝাড় সবই দেয়াল ঘেরা একটা গ্রামের মতো এরিয়ার মধ্যেই। আরো ছোট পাহাড়, দর্শনার্থীদের জন্য এখাণে আছে ছোট ছোট সিড়ি। আছে পানীয় জলেন ব্যবস্থা। পিকনিক করার জন্য সব আয়োজন আছে বিশ্রামের সু ব্যবস্থা।

বার্ডে প্রবেশের জন্য কোনো টিকেট নেই। তবে রাতে থাকার জন্য প্রতি রুমের ভাড়া ৫০০ টাকা। প্রতি রুমে ২টি করে বেড রয়েছে। আর হলরুমের ভাড়া ১০ হাজার থেকে ৪০ হাজার পর্যন্ত। এছাড়া ভিআইপি পিকনিক স্পট এর জন্য আলাদা ভাড়া দিতে হয়। মাঠে খেলাধুলা বা অন্য কিছু এমন কি ঘুরে দেখার জন্য কোনো পয়সা দিতে হয়না।

কিভাবে যাবেনঃ-

ঢাকা থেকে কুমিল্লার বাসে যেতে হবে। আপনি নামতে পারেন ক্যান্টনমেন্ট মেইন গেটের সামনে অথবা কোর্টবাড়ী গেটের সামনে। সেনাসিবাসের ভেতর দিয়ে বাসে ২০ টাকা অথবা কোটবাড়ী রোডের মাথা থেকে অটোতে ২০ টাকায় জনপ্রতি বার্ডের সামনে গিয়ে নামা যায়। গ্রুপ ভ্রমণ বা ট্রেনিং এর জন্য অবশ্যই আগে থেকে যোগাযোগ করে বুকিং দিয়ে যাবেন। ৫/৭ জনের মামলা হলে অর্ডার দেয়া ছাড়াই ক্যাফটেরিয়াতে খেতে পারবেন। এর বেশী হলে আগেই অর্ডার ও এডভান্স পেমেন্ট করতে হবে। মনে রাখবেন এখানে বুকিং দিতে হবে ৯টা থেকে ৫টার মধ্যে। অন্যসময়ে হলে কর্তাদের পাওয়া যাবেনা।