জামালপুর জেলা | ট্র্যাভেল নিউজ বাংলাদেশ

1478

জামালপুর জেলা বাংলাদেশের মধ্যাংশের অঞ্চল। ময়মনসিংহ বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চলে । জামালপুর বাংলাদেশের ২০তম জেলা। এ জেলার ভৌগলিক অবস্থান খুবই মনোমুগ্ধকর। বাংলাদেশের উত্তর সীমান্তে গারো পাহাড়ের পাদদেশে নৈসর্গিক দৃশ্য ও নয়নাভিরাম  প্রাকৃতিক লীলাভূমি যমুনা, ব্রক্ষ্মপুত্র,ঝিনজিরাম, ঝিনাই ও বানার নদীর পলি বিধৌত অববাহিকায় প্রখ্যাত সাধক আউলিয়া হযরত শাহ্ জামাল (রহ:) ও হযরত শাহ্ কামাল (রহ:) এর পূণ্য স্মৃতিধন্য ভূমিতে জামালপুর জেলার  অবস্থান।

জামালপুর জেলার বিভিন্ন জিনিসের দেশজোড়া খ্যাতি রয়েছে। তার মধ্যে ইসলামপুরের কাঁসার বাসন ও গুড়, মেলান্দহের উন্নতমানের তামাক ও তৈল, দেওয়ানগঞ্জের আখ ও চিনি, সরিষাবাড়ীর পাট ও সার, মাদারগঞ্জের মাছ, দুধ ও ঘি, বকশীগঞ্জের নকশীকাথা, চিনা মাটি,কাঁচ বালি, নুড়ি পাথর, বাঁশ ও বেতের আসবাবপত্র, জামদানি শিল্প এবং জামালপুর সদর উপজেলার আনারস, পান, বুড়িমার মিষ্ট, ও আজমেরীর জিলাপী,সর ভাজা,ছানার পায়েস,ছানার মিষ্টি অন্যতম। তাছাড়া জামালপুরের বিভিন্ন এলাকার কংকরযুক্ত লাল বালি, সাদা মাটি, কাঁচবালি এবং শাক-সবজি নিজ জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের অনেক জেলার চাহিদা মিটাতে সহায়তা করে। জামালপুর নকশি কাঁথা ও নকশি চাদর এখনো সারা দেশে সমাদৃত।

নামকরনের ইতিহাস:-

সাধক দরবেশ হযরত শাহ জামাল (র) এর পূণ্যস্মৃতি বিজড়িত নয়নাভিরাম সৌন্দর্যমন্ডিত গরো পাহাড়েরপাদদেশে যমুনা-ব্রক্ষ্মপুত্র বিধৌত বাংলাদেশের ২০-তম জেলা জামালপুর। হযরত শাহ জামাল (র) এরনামানুসারে জামালপুরের নামকরণ হয়।

ভৌগোলিক সীমানা:-

উত্তরে ভারতের মেঘালয় রাজ্য ও গারো পাহাড়, কুড়িগ্রাম জেলা, পূর্বে শেরপুর ও ময়মনসিংহ জেলা, দক্ষিণে টাঙ্গাইল জেলা এবং পশ্চিমে যমুনা নদীর তীরবতী সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম জেলা।

জামালপুর জেলা ৭টি উপজেলা

ইসলামপুর,

জামালপুর সদর,

দেওয়ানগঞ্জ,

বকশীগঞ্জ,

মাদারগঞ্জ,

মেলান্দহ এবং

সরিষাবাড়ি।

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিবর্গ:-

মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ বীর উত্তম (১৯৩৭-১৯৭৫) – মুক্তিযুদ্ধে ২ নং সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার এবং ‘কে-ফোর্স’-এর সর্বাধিনায়ক;

মোঃ নুরুল ইসলাম (বীর বিক্রম);

মোঃ মতিউর রহমান (বীর প্রতীক);

বশির আহমেদ (বীর প্রতীক)।

আব্দুল হাকিম (বীর প্রতীক)।

বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট আব্দুল হাকিম(১৯২৫-২০০০); গভর্নর ১৯৭৫।

আমজাদ হোসেন (বীর মুক্তিযোদ্ধা ১০ নম্বর সেক্টর)

মোঃ আব্দুল বারী মন্ডল (বীর মুক্তিযোদ্ধা।

মৌলভী মোহাম্মদ আব্দুল জব্বার পাহলোয়ান (অবিভক্ত বাংলার আইনসভার সদস্য ১৯২১-১৯৩৯)

আব্দুল করিম – ঢাকার জগন্নাথ হলে ১৯৪৮ সালের ২৯ মার্চ ইস্ট বেঙ্গল লেজিসলেটিভ এসেম্বলির স্পিকার নির্বাচিত হন;

আব্দুস সালাম তালুকদার (১৯৩৬-১৯৯৯) – বিএনপির মহাসচিব ও এলজিআরডি মন্ত্রী ও চারদলীয় লিঁয়াজো কমিটির চেয়ারম্যান;

রাশেদ মোশারফ – সাবেক ভুমি প্রাতিমন্ত্রী;

এম এ সাত্তার – জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী।

আবুল কালাম আজাদ – সাবেক তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী;

সিরাজুল হক – সাবেক স্বাস্থ্য উপমন্ত্রী;

রেজাউল করিম হীরা – সাবেক ভূমি মন্ত্রী;

মির্জা আজম (১৯৬২) – হুইপ ও প্রতিমন্ত্রী।

বিখ্যাত খাবার:-

ছানার পোলাও

ছানার পায়েস

বিখ্যাত স্থানঃ-

হজরত শাহ জামালের (রহ.) মাজার

আউলিয়া শাহ্ কামালের পবিত্র দরগা মাজার শরীফ্

গান্ধী আশ্রম

দয়াময়ী মন্দির

দেওয়ানগঞ্জের সুগার মিলস

লাউচাপড়া পিকনিক স্পট

যেভাবে যাবেনঃ-

জামালপুর জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা বর্তমানে খুবই ভাল। বৃটিশ আমল থেকেই ঢাকা থেকে বাহাদুরাবাদ এবং জগন্নাথগঞ্জ ঘাটের সাথে ট্রেণ যোগাযোগ ছিল। রেলপথে মানুষ স্বাচ্ছন্দে কম খরচে যাতায়াত করতে পারতেন। বর্তমানে ঢাকা থেকে রেল ও সড়ক পথে জামালপুরে যাতায়াত করা যায়। ঢাকা থেকে রেলপথে জামালপুরের দূরত্ব ১৭৭ কিঃমিঃ এবং সড়ক পথের দূরত্ব ২০০ কিঃমিঃ। ৪টি আন্ত:নগর ট্রেনসহ- বেসরকারী ট্রেন প্রতিদিন চলাচল করে। তাছাড়া জামালপুর থেকে দেশের প্রায় সবগুলো জেলাতেই বাসযোগে যাতায়াত করা যায়। সবকটি উপজেলার সাথেই সড়ক পথে যাতায়াত করা যায়। জেলা সদর থেকে দেওয়ানগঞ্জ ও বকশীগঞ্জ উপজেলার দূরত্ব সবচেয়ে বেশী । অন্যান্য উপজেলার দূরত্ব খুব একটা বেশী নয়।