শেরপুরের ঘাঘরা মসজিদ| ট্র্যাভেল নিউজ

1406

মোঘল সম্রাজ্যের প্রায় সোয়া দুইশ বছরের পুরনো শেরপুরের ঘাঘরা লস্কর ‘খান বাড়ী’জামে মসজিদটি আজও দাঁড়িয়ে আছে কালের সাক্ষী হয়ে। স্থাপত্যকলার অনুপম নিদর্শন ঐতিহাসিক এ ‘খান বাড়ী’র মসজিদটি শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতি উপজেলার ঘাগড়া লস্কর গ্রামে অবস্থিত। তাই কালের আবর্তে এ মসজিদের নাম ঘাগড়া লস্কর খান মসজিদ হিসেবেই পরিচিতি লাভ করেছে।

ঘাঘড়া খান বাড়ি জামে মসজিদ মুঘল আমলে নির্মিত হয়। মসজিদের দরজায় কষ্টি পাথরে খোদাই করা আরবি ভাষায় নির্মাণকাল দেওয়া আছে হিজরী ১০২৮ সাল বা ইংরেজি ১৬০৮ সাল। মসজিদের গাঁয়ের নিদর্শন থেকে ধারণা করা হয় মসজিদটি বক্সার বিদ্রোহী হিরঙ্গী খানের সময়কালে নির্মাণ করা হয়েছিল। আজিমোল্লাহ খান মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেন বলে অনুমান করা হয়।

মসজিদটির গঠনপদ্ধতি ও স্থাপত্য কৌশল শিল্পসমৃদ্ধ ও সুদৃশ্য। এর ভিতরে রয়েছে দুটো সুদৃঢ় খিলান। এক গম্বুজবিশিষ্ট এ মসজিদের দৈর্ঘ্য-প্রস্থ উভয়দিকেই সমান। এর ভেতরের অংশ ৩০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩০ ফুট প্রস্থবিশিষ্ট। মসজিদের মধ্যখানে বড় গম্বুজের চারপাশে ঘিরে ছোট-বড় দশটি মিনার। এরমধ্যে চারকোনায় রয়েছে চারটি। মসজিদে দরজা রয়েছে মাত্র একটি। ভেতরে মেহরাব ও দেয়াল অঙ্কিত রয়েছে বিভিন্ন কারুকাজের ফুলদানী ও ফুল। তৎকালীন খান বাড়ির লোকজন এবং গ্রামের আরও অনেকেই ৫৮ শতক জায়গার উপর মসজিদটি ওয়াক্‌ফ করে দেয়। এরমধ্যে মসজিদটির মূল ভবন ও বারান্দা বা বর্ধিত জায়গা রয়েছে ১৭ শতকের ওপর এবং ৪১ শতকের ওপর জমিতে রয়েছে কবরস্থান।

মসজিদের আকার বা পরিধি যাই হোক না কেনো মসজিদে ঢুকে নামাজ আদায় করার সময় নস্টালজিয়ায় বুদ না হয়ে পারা যায়না। স্মৃতিতে কেবল দুইশ’ বছর পেছনের মোঘল সাম্রাজ্যের অনুভূতি। এক অদ্ভুত ঘোরলাগা মুগ্ধতা। নিজে উপস্থিত হয়ে নামাজ না পড়লে বিশ্বাস করানো বা বোঝানো সম্ভব নয়।

কিভাবে যাবেন:-

সড়ক পথে ঢাকা হতে শেরপুরের দূরত্ব ২০৩ কিলোমিটার। ঢাকার মহাখালি বাস স্টেশন থেকে শেরপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা দুরপাল্লার বাসে শেরপুর আসা যায়।শেরপুর জেলাসদর থেকে এর দূরত্ব ১৪ কিলোমিটার।