ডাবল ফলস ঝর্ণা

1444

বান্দরবানে ঝর্ণার অভাব নেই, ঠিক যেমন অভাব নেই পাহাড়ের। বিভিন্ন পাহাড়ে লুকিয়ে আছে ছোটবড় বিভিন্ন ঝর্ণা। ত্লাবং ঝর্ণা বা ডাবল ফলস বা ক্লিবুং ঝর্ণা ঠিক এরকম একটি ঝর্ণা। অন্য ঝর্ণাগুলোর থেকে এর মৌলিক পার্থক্য হল, এটাতে ঝর্ণাধারা আছে দুটো। এই ঝর্ণাটি মূলত রেমাক্রি খালের উৎস। দুটি ঝিরি প্রানশা (বামেরটি) এবং পাংখিয়াং (ডানে) মিলে এই ডাবল ফলস ঝর্ণাটি তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশের অন্যতম আকর্ষণীয় ঝর্ণার মধ্যে এই ডাবল ফলস অন্যতম। যদিও এখানে যাওয়া নিয়ে আর্মির নিষেধাজ্ঞা থাকে অনেকসময়ই।

রেমক্রি খালের উৎস এই ত্লাবং ঝর্ণা থেকেই। এই ঝর্ণাটির উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে এর পানি দুটি ধারায় উপর থেকে নেমে আসে। এই ধারা দুটির ও আছে আলাদা নাম। দুটি ঝিরির বাম পাশের টা প্রানশা এবং ডান পাশেরটা পাংখিয়াং মিলে এই ডাবল ফলস ঝর্ণাটি তৈরি হয়েছে। এর দরুন এঁকে জোড়া ঝর্ণা নামেও ডাকা হয়।

আনুমানিক ৭০ ফুট উপর থেকে নেমে আসা এই ঝর্ণার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে দূর দূরান্ত থেকে পর্যটকেরা দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে এঁকে দেখতে আসে। চারপাশটা সবুজ গাছগাছালি ঘেরা নির্জন নিস্তব্ধ পরিবেশ। প্রবল বেগে দুটি ধারা দিয়ে নেমে আসা শীতল জলে ভ্রমণকারীরা সিক্ত হয় এখানে। ত্লাবং  একটি বম শব্দ। এর অর্থ পানি ধরে রাখার ‘বেসিন বা গর্ত’। উপর থেকে দুটি ধারায় ঝর্ণার পানি প্রবল স্রোতে নেমে এসে নিচে একটি কূপ সৃষ্টি হওয়ায় এই নামটি দেয়া হয়। আর এই কূপের ফলে দীর্ঘ সময় সাঁতরে কাটিয়ে দেয়া যায় এখানে। গ্রীষ্ম, বর্ষা সব সময়ই কম বেশি জলের দেখা পাবেন এই ঝর্নায়।

যেভাবে যাবেনঃ-

ঢাকা থেকে বান্দরবানগামী অনেক বাস আছে। বাসে করে সরাসরি বান্দরবানে যেতে হবে। এর পরে চান্দের গাড়ি কিংবা লোকাল বাস নিয়ে রুমা বাজার, সেখান থেকে চান্দের গাড়ি করে বগা লেক। সেখান থেকে  বাংলাদেশের পঞ্চম উচ্চ পাহাড় কেওক্রাডং এ। এর পরেই বেশ খানিকটা হাঁটলে আপনি চলে আসবেন বাংলাদেশের সর্বোচ্চ গ্রাম পাসিং পাড়া, সেখান থেকে প্রায় এক হাজার ফুট নামতে হবে, তারপরেই দেখা পাবেন সুংসাং পাড়ার। এর পরেও প্রায় দু ঘণ্টা হাঁটলে তারপরে পাওয়া যাবে ডাবল ফলস। তবে বেশ কিছুদিন ধরে আর্মি কেওক্রাডং পার হয়ে যেতে দেয় না।