চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা | ট্র্যাভেল নিউজ বাংলাদেশ

1156

চাঁপাইনবাবগঞ্জ ঐতিহাসিক নিদর্শন ও প্রতণসম্পদে সমৃদ্ধ একটি জেলা। প্রাচীন বাংলার রাজধানী গৌড়ের রাজধানী হিসেবে শিবগঞ্জ উপজেলায় বিভিন্ন ধরনের ঐতিহাসিক স্থাপনা ও দর্শনীয় নিদর্শন হিন্দু শাসন আমলে বিশেষ করে সেন বংশের শেষ রাজাদের খননকৃত দিঘী ও সুলতানী আমলে মুসলিম সুলতানদের নির্মিত মসজিদই এ উপজেলার প্রধান ঐতিহাসিক স্থাপনা। তাছাড়া বৃটিশ আমলে স্থানীয় জমিদারদেরও কিছু স্থাপনা শিবগঞ্জে দেখা যায়।

নামকরনের ইতিহাস:-

‘চাপাইনবাবগঞ্জ’ নামটি সাম্প্রতি কালের।এই এলাকা ‘নবাবগঞ্জ নামে পরিচিত ছিল। চাঁপাইগঞ্জ নাম করণ সম্পর্কে জানা যায়, প্রাক-ব্রিটিশ আমলে এ অঞ্চল ছিল মুর্শিদাবাদের নবাবদের বিহার ভূমি এবং এর অবস্থান ছিল বর্তমান সদর উপজেলার দাউদপুর মৌজায়। নবাবরা তাঁদের পাত্র-মিত্র ও পরিষদ নিয়ে এখানে শিকার করতে আসতেন বলে এ স্থানের নাম হয় নবাবগঞ্জ।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নামের ইতিবৃত্ত নবাব আমলে মহেশপুর গ্রামে চম্পাবতী মতান্তরে ‘চম্পারানী বা চম্পাবাঈ’ নামে এক সুন্দরী বাঈজী বাসকরতেন। তাঁর নৃত্যের খ্যাতি আশেপাশে ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং তিনি নবাবের প্রিয় পাত্রী হয়ে ওঠেন। তাঁর নামানুসারে এই জায়গার নাম ‘চাঁপাই”। এ অঞ্চলে রাজা লখিন্দরের বাসভূমি ছিল। লখিন্দরের রাজধানীর নাম ছিল চম্পক। চম্পক নাম থেকেই চাঁপাই। ভাষাবিদ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর(১৮৮৫-১৯৬৯ খ্রি) ‘বাঙলা সাহিত্যের কথা’ গ্রন্থের প্রথম খন্ডে বর্ণিত লাউসেনের শত্রুরা জামুতিনগর দিয়ে গৌড়ে প্রবেশ করে। বর্তমান ভোলাহাট উপজেলার জাম বাড়িয়া পূর্বে জামুতিনগর নামে পরিচিত ছিল। এসবের ওপর ভিত্তি করে কোনো কোনো গবেষক চাঁপাইকে বেহুলার শ্বশুরবাড়ি চম্পকনগর বলেস্থির করেছেন এবং মত দিয়েছেন যে, চম্পক নাম থেকেই চাঁপাই নামের উৎপত্তি।

সীমানা:-

মোট ১,৭৪৪ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার অবস্থান বাংলাদেশের মানচিত্রে সর্ব পশ্চিমে। এর পূর্বে রাজশাহী ও নওগাঁ জেলা, উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মালদহ জেলা, পশ্চিমে পদ্মা নদী ও মালদহ জেলা দক্ষিণে পদ্মা নদী ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুর্শিদাবাদ জেলা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ ৫টি উপজেলা

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা

গোমস্তাপুর উপজেলা

নাচোল উপজেলা

ভোলাহাট উপজেলা

শিবগঞ্জ উপজেলা :-

কৃতি ব্যক্তিত্ব:-

ইলা মিত্র – উপমহাদেশের প্রখ্যাত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, ঐতিহাসিক তেভাগা আন্দোলনের নেত্রী।

প্রফেসর ড. এমাজউদ্দিন আহমদ – বাংলাদেশের প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, প্রখ্যাত বুদ্ধিজীবি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য।

প্রফেসর মো.রফিকুন নবী (র’নবী) – আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন প্রথিতযশা চিত্রশিল্পী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট অফ ফাইন আর্টস এর সাবেক পরিচালক।

আলোকচিত্রাচার্য মঞ্জুর আলম বেগ – বাংলাদেশের আলোকচিত্র আন্দোলনের পথিকৃৎ, আধুনিক ফটোগ্রাফীর জনক, একুশে পদক প্রাপ্ত আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন আলোকচিত্রাচার্য।

বিচারপতি মুহম্মদ হাবিবুর রহমান শেলি – ১৯৯৬ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা/অন্তবর্তীকালীন বাংলাদেশ সরকার প্রধান, বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি, মহান ভাষা আন্দোলের বীর সৈনিক, প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ, আইনজীবী, গবেষক ও লেখক।

প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মিজান উদ্দিন – শিক্ষাবিদ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য(২০১৩-২০১৭)।

নাট্যকার মমতাজ উদ্দীন আহমেদ-বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ।

ভাষা সৈনিক – এ্যাডভোকেট ওসমান গণি

রাজিত রহমান – (১৯৯২-২০১২)কানসাট আন্দোলনের প্রথম কবি

বিখ্যাত খাবার:-

আম

শিবগঞ্জের চমচম

কলাইয়ের রুটি

বিখ্যাত স্থান:-

ছোট সোনা মসজিদ

বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের সমাধি

দারসবাড়ী মসজিদ ও মাদ্রাসা

দারসবাড়ী মসজিদের প্রস্তরলিপি

খঞ্জনদীঘির মসজিদ

ধনাইচকের মসজিদ

চামচিকা মসজিদ

তিন গম্বুজ মসজিদ ও তাহখানা

তাহখানা কমপ্লেক্স

শাহ্ নেয়ামতউল্লাহ (রহ.) মাজার

শাহ নেয়ামতউল্লাহর সমাধি

কোতোয়ালি দরওয়াজা

দাফেউল বালা

বালিয়াদীঘি

খঞ্জনদীঘি

কানসাটের জমিদারবাড়ি

তরতীপুর

চাঁপাই জামে মসজিদ

মহারাজপুর জামে মসজিদ

মাঝপাড়া জামে মসজিদ

হজরত বুলন শাহর (রহ.) মাজার

সর্ববৃহৎ দুর্গাপূজা

মহারাজপুর মঞ্চ

বারঘরিয়া মঞ্চ

জোড়া মঠ

যেভাবে যাবেনঃ-

ঢাকা থেকে সরাসরি বাস কিংবা ট্রেইনে চেপে সরাসরি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহরে পৌঁছানো যায়। ঢাকার গাবতলি,সায়দাবাদ,মহাখালি বাস টার্মিনাল গুলো থেকে বাস পাওয়া যায়।কমলাপুর স্টেশন থেকে ট্রেইন যাত্রা শুরু হয়।