বাবা আদম শহীদ মসজিদ

1315

বাংলাদেশে ইসলাম প্রচারের ক্ষেত্রে বাবা আদম শহীদ এক কিংবদন্তির নায়কের ভূমিকা পালন করেছেন। বিশেষ করে মুন্সিগজ্ঞ -বিক্রমপুর এলাকায় তিনি এখনও সাধক পুরুষ হিসেবে পরিচিত। সেখানেই তিনি চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন। সুদূর আরব থেকে এদেশে ইসলাম প্রচারের জন্য তিনি সর্বোচ্চ কোরবানী করেছিলেন। বাবা আদম শহীদের মাযার এবং পার্শ্ববর্তী মসজিদ এখনও ইসলাম প্রচারে তার অবদানের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। তার স্মরণে নির্মিত মসজিদটি এখনও দূর-দূরান্তের মুসলমানদের মনে ইসলাম প্রচারে তার ভূমিকার কথা মনে করিয়ে দেয়ি। ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে বাংলাদেশ সরকারের পুরাতত্ত্ব বিভাগ এ স্থাপনার তত্ত্বাবধান করছে।

মসজিদটি অবশ্য আরও পরে নির্মিত হয়েছিল। মসজিদের সামনে লাগানো একটি আরবি লিপি অনুযায়ী, জালালুদ্দিন ফাতেহ সাহেব আমলে কাফুর নামক জনৈক ব্যক্তি ৮৮৮ হিজরীতে (১৪৮৩ খৃস্টাব্দে) নির্মাণ করেছিলেন। সম্ভবত বাবা আদমের কোনো মসজিদের ভিত্তির ওপরই তা প্রতিষ্ঠিত।

ছয় গম্বুজবিশিষ্ট এ মসজিদের নির্মাণশৈলী মনোমুগ্ধকর। এটি দৈর্ঘ্যে ৪৩ ফুট ও প্রস্থে ৩৬ ফুট। দেয়াল প্রায় চার ফুট চওড়া। ইট-সুরকি দিয়ে ভেতরে গাঁথা। নির্মাণ নকশা বা স্থাপত্যকলা অনুযায়ী মসজিদ ভবন উত্তর-দক্ষিণে লম্বা। সম্মুখের দিকে খিলান আকৃতির প্রবেশপথ। দুই পাশে সম আকারের দুটি জানালা। মসজিদের সামনে ওপরের দিকে রয়েছে ফারসি ভাষায় খোদাই করা কালো পাথরের ফলক। মসজিদের ভেতরে ঢুকে সামনে এগোলে চার কোনায় চারটি ত্রিভুজাকৃতির স্তম্ভ চোখে পড়ে। মসজিদের খিলান, দরজা, স্তম্ভের পাদদেশ, মেঝে ও ছাদের কার্নিশের নিচে ইট কেটে মুসলিম স্থাপত্যকলার অপূর্ব নকশাও লক্ষ করা যায়।

যেভাবে যাবেনঃ-

মুন্সিগঞ্জ শহর থেকে উত্তর-পশ্চিমে চার কিলোমিটার পথ পেরোলেই বাবা আদম মসজিদ। আর ঢাকা থেকে সড়কপথে মসজিদের দূরত্ব মাত্র ২৮ কিলোমিটার। সদরঘাট থেকে নৌপথে মিরকাদিমের কাঠপট্টি ঘাটে নামার পর আধা কিলোমিটারের মধ্যেই মসজিদটি। সদরঘাট-কাঠপট্টি ঘাট এক ঘণ্টার পথ।